অ্যালোভেরা বা ঘৃতকুমারীর গুনাগুন এক কথায় বলে শেষ করা যাবে না। শুধুমাত্র স্বাস্থ্য নয় রূপচর্চাতে ও এর গুরুত্বপূর্ণ অপরিসীম। বহুজীবী এই ভেষজ উদ্ভিদ অনেকটা আনারস গাছের মতো দেখতে। এর পাতাগুলি পুরু, দুধারে কাটা এবং ভেতরে এর পিচ্ছিল শাঁস থাকে। ঘৃতকুমারীর পাতার এই নির্যাসে ভিটামিন (A,B1,B2,B12,C,E), ফোলিক অ্যাসিড,খনিজ মৌল, অ্যামিনো অ্যাসিড ও ফ্যাটি অ্যাসিড,ক্যালসিয়াম, সোডিয়াম, জিংক, আয়রন, পটাশিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, জিঙ্ক, ইত্যাদি রয়েছে। এছাড়াও এই নির্যাস অ্যান্টিপাইরেটিক উপাদান বিশিষ্ট,তাই জ্বর হলে তাপমাত্রা কমাতে ব্যবহৃত হয় । এই নির্যাস গ্যাস্ট্রিক,ক্ষত,কোষ্ঠকাঠিন্যের হাত থেকে রক্ষা করে।এছাড়াও এর আরো অনেক গুনাগুন রয়েছে।

কীভাবে অ্যালোভেরা ব্যবহার করবেন??


ওজন কমাতে- যারা অতিরিক্ত ওজন নিয়ে চিন্তিত তাদের জন্য অ্যালোভেরা অত্যন্ত উপকারী। অ্যালোভেরা জুসের মধ্যে রয়েছে অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি উপাদান যা শরীরের জমে থাকা মেদ দূর করে। আজ থেকেই অ্যালোভেরা জুস পান করা শুরু করুন দ্রুত উপকার পাবেন।


ডায়াবেটিস- যারা দীর্ঘদিন ধরে ডায়াবেটিস এর সমস্যায় ভুগছেন তারা রক্তে গ্লুকোজ এর মাত্রা কমিয়ে আনতে নিয়মিত অ্যালোভেরা জুস খান, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকবে।


হজম প্রক্রিয়া- হজম শক্তি বৃদ্ধি তে অ্যালোভেরা অত্যন্ত কার্যকরী। এর মধ্যে রয়েছে অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি উপাদান যা পাকস্থলী ঠান্ডা রাখতে সহায়তা করে এবং গ্যাসের সমস্যা দূর করে। নিয়মিত অ্যালোভেরা সরবত পান করতে পারেন, বেশ উপকার পাবেন।


দাঁত ও মাড়ির সমস্যা- অ্যালোভেরা বা ঘৃতকুমারীতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, যা মুখের জীবাণু দূর করে মাড়ি ফোলা, মাড়ি থেকে রক্ত পড়া বন্ধ করে। গবেষণায় দেখা গেছে, অ্যালোভেরার জেল মাউথ ওয়াশ এর বিকল্প হিসেবেও ব্যবহার করা যায়।


রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি- সুস্থ ভাবে জীবন যাপন করতে চাইলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করা আবশ্যক। এক্ষেত্রে অ্যালোভেরা আপনার উপকারে আসবে। অ্যালোভেরা জুস পান করা শুরু করুন ছোট বড়ো নানান রোগ আপনার থেকে দূরে থাকবে।


রক্তচাপ কমাতে- রক্তচাপ কমাতে অ্যালোভেরা অত্যন্ত কার্যকরী।ডাক্তার এর পরামর্শ নিয়ে অ্যালোভেরা খেতে পারেন। অ্যালোভেরা জেল রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা এবং চিনি মাত্রা স্বাভাবিক অবস্থায় আনতে সহায়তা প্রদান করে।


ক্লান্তি দূর করতে- বহুগুণ সম্পন্ন অ্যালোভেরা শরীরের ক্লান্তি দূর করতে অনেকটা সাহায্য করে। নিয়মিত অ্যালোভেরা জুস পান করলে দেহের ক্লান্তি দূর হবে এবং দেহকে সতেজ ও সুন্দর রাখতে সহায়তা করবে।


মাংসপেশী ও জয়েন্টের ব্যাথার উপশমে- মাংসপেশী ও জয়েন্টের ব্যাথা উপশমে অ্যালোভেরা অত্যন্ত কার্যকরী। ব্যাথা স্থানে অ্যালোভেরা লাগালে বেশ ভালো উপকার পাওয়া যায় ।


ত্বকের যত্নে- ত্বকের যত্নে অ্যালোভেরা প্রাচীন কাল থেকেই ব্যবহৃত হয়ে আসছে। অ্যালোভেরার মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি যা ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে। এর মধ্যে থাকা অ্যান্টি- ইনফ্লামেনটরী উপদান ত্বকের ইনফেকশন দূর করে ব্রন হওয়ার প্রবনতা কমায়। এছাড়াও এর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট গুন বয়সের ছাপ পড়া, ব্রনের দাগ দূর করা, ট্যান দূর করার মতো নানান সমস্যা সমাধানে সাহায্য করে এই অ্যালোভেরা।


চুলের যত্নে- চুলের যত্নেও অ্যালোভেরা অত্যন্ত কার্যকরী। চুল মজবুত ও লম্বা করতে অ্যালোভেরার যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে। অ্যালোভেরাকে প্রাকৃতিক কন্ডিশনারও বলা হয় এটি চুলকে ময়েশ্চারাইজ করে চুলের উজ্জ্বলতা বাড়াতে সহায়তা করে। এছাড়াও খুশকি দূর করতে,চুল পড়া কমাতে,চুলকে ঘন রাখতে,স্ক্যাল্পে ইনফেকশন প্রতিরোধে সহায়তা করে।